নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকাঃ প্রথমবারের মতো প্রবর্তিত ‘দুরন্ত বিপ্লব কৃষি পুরস্কার- ১৪৩০’ পেয়েছেন তিন কৃষক। ‘দেশি চালের হাট’ নামক সংগঠনটি নব্বইয়ের দশকের প্রায়ত ছাত্রনেতা দুরন্ত বিপ্লবের অনুসারী কিছু কৃষক সংগঠনটি তৈরি করেছেন।
এ বছর তিনটি ক্যাটাগরিতে তিনজনকে পুরস্কার দেয়া হয়েছে দেশি ধান উৎপাদক ক্যাটাগরিতে শাহাদাত হোসেন, দেশি চাল প্রস্তুতকারক ক্যাটাগরিতে তৌকির আহমেদ (মনজু), দেশি চাল বিপননকারী ক্যাটাগরিতে গোলাম সারোয়ার লিটন।
শুক্রবার ( ২ ফেব্রুয়ারী) শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে দুরন্ত বিপ্লব কৃষি পুরস্কার- ১৪৩০ প্রদান করা হয়।
দুরন্ত বিপ্লব কৃষি পুরস্কার- ১৪৩০ তিন কৃষকের হাতে তুলে দেন প্রায়ত দুরন্ত বিপ্লবের বোন শ্বাশতী বিপ্লব ও দুর্জয় বিপ্লব।
এ সময় শ্বাশতী বিপ্লব বলেন, যারা বাঙলার আদি ও অর্গানিক কৃষিকে এগিয়ে যাবে এটাই আমার ভাই দুরন্ত বিপ্লবের প্রচেষ্টা ছিলো। আমার ভাইয়ের স্লোগান ছিল, ‘দেশবাসী চলেন ভাই, কৃষিকাজে মন লাগাই’।
এসময় ভাইকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে শ্বাসতী বিপ্লব বলেন, অন্যায়ভাবে মেরে ফেলা হল, শারিরীকভাবে মেরে ফেলা হলেও তার আদর্শকে মেরে ফেলা সম্ভব না। ভাই হত্যার বিচার দাবি করে যাবো।
দুর্জয় বিপ্লব বলেন, ভাই দীর্ঘদিন কৃষিকাজ করার চেষ্টা করেছেন। পশুখাদ্য থেকে শুরু কৃষির অনেককিছু নিয়ে গবেষণা করতেন। ভাইয়ের স্বপ্ন আপনারা এগিয়ে নিয়ে যাবেন এটাই প্রত্যাশা।
‘দুরন্ত বিপ্লব কৃষি পুরস্কার- ১৪৩০’ উদ্যোক্তা হাসান মাহাদী বলেন, দুরন্ত বিপ্লবের একটা স্বপ্ন কুড়ি থেকে মহীরুহ হয়ে উঠছে কিন্তু কিন্তু সে আর আমাদের মাঝে নেই। ২০২২ সালের ০৭ নভেম্বরী তিনি কেরানীগঞ্জ থেকে নিখোঁজ হন এবং ১২ নভেম্বর নায়ারণগঞ্জের কাছে শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
চালের হাটের উদ্যোক্তাদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে দুরন্ত বিপ্লবের নামে একটি কৃষি পুরস্কার দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
পদকজয়ী কৃষক শাহাদাত হোসেন গত ৪ বছর ধরে কৃষি কাজে সম্পৃক্ত। এর আগে তিনি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চাকরি করতেন।
চাকরি ছেড়ে কৃষি কাজে মনোনিবেশে কারণ হিসেবে এ কৃষক বলেন, শারীরিক মানসিক যন্ত্রণায় চাকরি ভালো লাগে না। এরপর ভালো লাগা থেকে কৃষির সাথে জড়িত হয়েছি।
পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ করতে ইংরেজিতে মাস্টার্স করা এ কৃষক বলেন, কৃষি সাধারণভাবে চাষ করতাম। এখন আদি জাতের ফসল চাষ করছি। মানুষের এটাই চাষ করা উচিত। প্রথমে লাভ কম হয়েছে, তবে খরচ কম, এজন্য স্বস্তি পাওয়া আর শান্তি পাওয়া যায়। স্বস্তিতে কাজ করা যায় এখন লাভ হচ্ছে। এক একর জায়গায় চার জাতের ধান চাষ করছি। আমন- দাতখানি, আব্দুলগুটি, রাধাতিলক আর তুলসীমালা।
দেশি চাল প্রস্তুতকারক ক্যাটাগরিতে পদকজয়ী কিশোরগঞ্জ সদরের নীলগঞ্জের তৌকির আহমেদ (মনজু) বলেন, ২০০৯ সাল থেকে কৃষির সাথে যুক্ত। দেশি চাল স্বাস্থ্য সম্মত এজন্য কৃষকদের উদ্যোক্তা বানাতে কাজ করছি, যেন সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি। পুরস্কার পেয়ে গর্বিত লাগছে।