রূপসী বাংলা ২৪

১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সারাদেশ

চট্টগ্রামের ১১০ একর জমি উপহার নিয়েও ২৯ বছরে কিছুই করেনি আমিরাতের বাদশা

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম: আমিরাতের বাদশা শেখ জায়েদ ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সফরকালে একটি এতিমখানা প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা প্রকাশ করে। এরপর চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নে ১১০ একর জমি প্রদান করা হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নামমাত্র এক টাকা মূল্যে উপহার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত ৩৯ বছর ধরে সেই জমি পতিত পড়ে রয়েছে।

তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার তখন দ্রুত ওই জমি অধিগ্রহণ করে ১৯৮৫ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে হস্তান্তর করে। আমিরাতে আমিরের নামে নিবন্ধিত হলেও স্থানীয়রা একে ‘সৌদি প্রকল্প’ নামে চেনে।  

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুটি বিশাল ফটক, সীমানাপ্রাচীর ও একটি রাস্তা নির্মাণ ছাড়া কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়নি এখানে। অবহেলার কারণে পাহাড়ি এলাকাটি ঝোপঝাড় ও আগাছায় ভরে গেছে। বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটি গাছ দেখা গেলেও পরিকল্পিত বনায়নের কোনো চিহ্ন চোখে পড়েনি।

প্রবেশফটক সংলগ্ন অফিসের চারটি কক্ষ নিয়ে পরিবার নিয়ে সেখানে থাকেন একমাত্র নিরাপত্তারক্ষী মাজু মিয়া (৬৫)।

মাজু মিয়া জানান, গত ১০ বছর ধরে তিনি একাই এই বিশাল প্রকল্প এলাকা পাহারা দিচ্ছেন। ঢাকায় সংযুক্ত আরব আমিরাত দূতাবাস তাকে মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতনে নিয়োগ দিয়েছে।

মাজু মিয়া বলেন, দূতাবাসের কর্মকর্তারা বছরে দু-একবার প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, তার বেতনও নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে না।

লিটন দাস নামে এক স্থানীয় যুবক বলেন, কয়েক বছর আগে আরব আমিরাতের অর্থায়নে ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে একটি বিশ্বমানের নার্সিং ইনস্টিটিউট ও একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের কথা শোনা গিয়েছিল এখানে। তিনি বলেন, ‘এই উপলক্ষে ২০২২ সালের ২৭ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।’

লিটন দাস আরও বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবে।

বেতাগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিউল আলম বলেন, সরকার এলাকার মানুষের কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত দূতাবাসের কাছে হস্তান্তর করার পর ৩৮ বছর পেরিয়ে হলেও জমিটি অলস পড়ে আছে। ‘এখানে হাসপাতাল বা নার্সিং কলেজের মতো স্থাপনা তৈরি হলে মানুষের কর্মসংস্থান হবে,’ বলেন তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাত দূতাবাস দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ওই জমি-সংক্রান্ত একাধিক ইমেইলের জবাব দেয়নি।

প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম এবং অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) আহমেদুল কবিরকে একাধিকবার মুঠোফোনে ফোন করা হলেও সাড়া না দেওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন

সারাদেশ

রেললাইনের ক্লিপ খোলার সময় আনসার বাহিনীর হাতে আটক এক যুবক

  • জানুয়ারি ১৯, ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক জামালপুর: জামালপুরের নান্দিনায় রেললাইনের ক্লিপ খোলার সময় আনসার বাহিনীর সদস্যদের হাতে আটক হয়েছেন  এক যুবক। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি)
সারাদেশ

দেশের কোন মানুষের পেটে ক্ষুধা না রাখার আশাবাদ কৃষিমন্ত্রীর

  • জানুয়ারি ১৯, ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক মৌলভীবাজার: দেশের কোন মানুষের পেটে যাতে ক্ষুধা না রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ। তিনি বলেছেন, দেশের